অনলাইন জুম ক্লাসে

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

২৪ জুন থেকে শুরু

তথ্য জানতে / ভর্তি হতে : 01309-541565

সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ

[লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি, ২০২০]

[লেখকের নোট : আমাদের এবারের টপিক সাধারণ ব্যতিক্রম বা General Exceptions। এটা দণ্ডবিধির চতুর্থ অধ্যায়। এর টপিকের বিস্তৃতি ৭৬ থেকে ১০৬ নং ধারা পর্যন্ত হলেও এর আরেকটা আলাদা অংশ আছে ব্যক্তিগত আত্মরক্ষার অধিকার বা Right to private defence এই শিরোনামে। এই অংশটুকু ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত। ‘ব্যক্তিগত আত্মরক্ষার অধিকার’ এই বিষয়টি সাধারণ ব্যতিক্রমের মধ্যেই পড়ে, যদিও তা ব্যক্তিগত আত্মরক্ষার অধিকার নামেই অধিক পরিচিত।

দণ্ডবিধি মূলত শাস্তি ও অপরাধ সংক্রান্ত আলোচনা ও ব্যাখ্যা করেছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিছু ব্যতিক্রমের ধারণাও এখানে ডেভেলপ করেছে। যে সকল কাজ আইনের দৃষ্টিতে প্রাথমিকভাবে অপরাধ বা শাস্তিযোগ্য / দণ্ডনীয় বলে মনে হয়, কিন্তু তা অনেকগুলো বিশেষ ক্ষেত্রে, বিশেষ শর্তে যখন দণ্ডনীয় হয় না, সেই বিষয়গুলোই আলোচনা করা আছে সাধারণ ব্যতিক্রমের মধ্যে।

এই অংশ থেকে বিগত সালে বার কাউন্সিলে কখনো প্রশ্ন আসেনি। তবে জুডিসিয়ারির ২০০৭ সালের পরীক্ষায় এ সংক্রান্ত প্রশ্ন এসেছিলো। ফলে, সেই প্রশ্নটিকে বিবেচনায় নিয়ে এখানে এই টপিকটি সামনে নিয়ে আসা হলো।

নিচে ৭৬ ধারা থেকে ৯৫ পর্যন্ত ধারাগুলো মূল ধারার ইংরেজি উল্লেখসহ দেওয়া থাকলো যেন চাইলে মূলধারার পাঠগুলোও সেরে নিতে পারেন [৯৬-১০৬ ধারা আগের অংশে উল্লেখ ছিলো]। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, দণ্ডবিধির চতুর্থ অধ্যায় তথা সাধারণ ব্যতিক্রমের অংশটির মূল ভিত্তিমূলক একটি ধারা আছে, যা আমাদের অনেকেরই নজর এড়িয়ে যায়; ধারাটি হলো ৬ ধারা। ফলে সেটিও প্রাসঙ্গিকভাবে তুলে দেওয়া থাকলো। ধন্যবাদ।]

সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ [৭৬-৯৫ ধারার অংশটুকু]

ধারা ৬ : এই আইনের সংজ্ঞাগুলোর অর্থ ব্যতিক্রমসমূহ সাপেক্ষে হবে [Definitions in the Code to be understood subject to exceptions] : এই বিধির সর্বত্র সকল অপরাধের প্রতিটি সংজ্ঞা, প্রতিটি দণ্ডপ্রদান এবং অনুরূপ সংজ্ঞা বা দণ্ডবিধানের প্রত্যেকটি উদাহরণের অর্থ ‘সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে বিধৃত ব্যতিক্রমসমূহ সাপেক্ষে করতে হবে, যদিও উক্ত ব্যতিক্রমসমূহ অনুরূপ সংজ্ঞা, দণ্ডনীয় বিষয়ক বা উদাহরণে পুনরুল্লেখ করা না হয়। [Throughout this Code every definition of an offence, every penal provision and every illustration of every such definition or penal provision, shall be understood subject to the exceptions contained in the chapter entitled “General Exceptions,” though those exceptions are not repeated in such definition, penal provision or illustration.]

উদাহরণসমূহ [Illustrations]
(ক) এই আইনের যে সকল ধারায় অপরাধের সংজ্ঞা নির্দেশ করা হয়েছে, সে সকল ধারায় বলা হয় নাই যে, সাত বৎসরের কম বয়স্ক কোনো শিশুর কর্তৃক উক্ত অপরাধগুলি অনুষ্ঠিত হতে পারে না, তথাপি সংজ্ঞাগুলির এই সাধারণ ব্যতিক্রম সাপেক্ষেই গ্রহণ করতে হবে যে, সাত বৎসরের কম বয়স্ক শিশুদের কোনো কর্মই অপরাধ বলে পরিগণিত হবে না। [(a) The sections in this Code, which contain definitions of offences, do not express that a child under seven years of age cannot commit such offences; but the definitions are to be understood subject to the general exception which provides that nothing shall be an offence which is done by a child under seven years of age.]

(খ) ক একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বিনা পরোয়ানায় খ-কে গ্রেফতার করেন, যে খুন করেছে। এই ক্ষেত্রে ক অন্যায় আটক করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবেন না; কেননা তিনি খ কে গ্রেফতার করতে আইনত বাধ্য ছিলেন। কাজেই বিষয়টি সাধারণ ব্যতিক্রমের অধীনে পড়ে, কোনো ব্যক্তি আইনত যে কার্য করতে বাধ্য তিনি সে কার্য করলে তা অপরাধ হবে না। [(b) A, a police officer, without warrant, apprehends Z who has committed murder. Here A is not guilty of the offence of wrongful confinement; for he was bound by law to apprehend Z, and therefore the case falls within the general exception which provides that “nothing is an offence which is done by a person who is bound by law to do it”.]

ধারা ৭৬ : আইনত বাধ্য বা ভুল ধারণাবশত নিজেকে আইনবলে বাধ্য বলে বিশ্বাসকারী ব্যক্তিবিশেষ কর্তৃক সম্পাদিত কার্য [Act done by a person bound, or by mistake of fact believing himself bound, by law] : যে ব্যক্তি কোনো কিছু সম্পাদন করার জন্য আইনবলে বাধ্য বা তথ্যের ভুল ধারণাবশত, আইনের ভুল ধারণাবশত নয়, সরল বিশ্বাসে নিজেকে কোনো কিছু সম্পাদন করার নিমিত্তে আইনবলে বাধ্য বলে বিশ্বাস করে, সে ব্যক্তি উক্ত কাজ সম্পাদন করলে তা অপরাধ নয়। [Nothing is an offence which is done by a person who is, or who by reason of a mistake of fact and not by reason of a mistake of law in good faith believes himself to be, bound by law to do it.]

উদাহরণহসমূহ [Illustrations]:
ক) সৈনিক ‘ক’ তার উর্ধ্বতন অফিসারের আদেশ অনুযায়ী আইনের নির্দেশ মোতাবেক কোনো জনতার ওপর গুলি চালায়। ‘ক’ কোনো অপরাধ করে না। [(a) A, a soldier, fires on a mob by the order of his superior officer, in conformity with the commands of the law. A has committed no offence.]

খ) বিচারালয়ের কোনো এক কর্মকর্তা ‘ক’ উক্ত বিচারালয় কর্তৃক ‘ম’ কে গ্রেফতার করার জন্য আদিষ্ট হয় এবং যথাযথ তদন্তের পর ‘খ’ কে ‘ম’ মনে করে ‘খ’ কে গ্রেফতার করেন। ‘ক’ কোনো অপরাধ সংঘটিত করেনি। [(b) A, an officer of a Court of Justice, being ordered by that Court to arrest Y, and, after due enquiry, believing Z to be Y, arrests Z. A has committed no offence.]

ধারা ৭৭ : বিচার বিষয়ক কার্য পরিচালনাকালে বিচারকের কার্য [Act of judge when acting judicially] : বিচারকের দ্বারা বিচার সম্পর্কিত কার্য পরিচালনাকালে আইনবলে তৎপ্রতি প্রদত্ত হয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন, এরূপ যেকোনো ক্ষমতা প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে সম্পাদিত কোনো কিছুই অপরাধ হবে না। [Nothing is an offence which is done by a Judge when acting judicially in the exercise of any power which is, or which in good faith he believes to be, given to him by law.]

ধারা ৭৮ : আদালতের রায় কিংবা আদেশের অনুসরণে সম্পাদিত কার্য [Act done pursuant to the judgment or order of Court] : বিচারালয়ের রায় কিংবা আদেশের অনুসরণে অথবা দাবিক্রমে সম্পাদিত কোনো কার্যই, ঐ রায় বা আদেশ বলবৎ থাকাকালে সম্পাদিত হলে অপরাধ নয়, যদিও উক্ত আদালতের অনুরূপ রায় বা আদেশ প্রদান করার কোনো অধিক্ষেত্র না থাকে অবশ্য এ শর্তে যে, উক্ত কার্য সম্পাদনকারী ব্যক্তি সদবিশ্বাসে বিশ্বাস করেন যে, উক্ত কার্য সম্পাদনে আদালতের অনুরূপ অধিক্ষেত্র ছিলো। [Nothing which is done in pursuance of, or which is warranted by the judgment or order of, a Court of Justice, if done whilst such judgment or order remains in force, is an offence, notwithstanding the Court may have had no jurisdiction to pass such judgment or order, provided the person doing the act in good faith believes that the Court had such jurisdiction.]

ধারা ৭৯ : আইন সমর্থিত কিংবা ভুল ধারণাবশত নিজেকে আইন সমর্থিত বলে বিশ্বাসকারী ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত কার্য [Act done by a person justified, or by mistake of fact believing himself justified, by law]: আইন সমর্থিত ব্যক্তি, কোনো কিছু সম্পাদনের নিমিত্তে বা যে ব্যক্তি ভুল ধারণাবশত সদবিশ্বাসে নিজেকে আইন সমর্থিত বলে বিশ্বাস করে, এরূপ ব্যক্তি দ্বারা সম্পাদিত কোনো কিছু অপরাধ নয়। [Nothing is an offence which is done by any person who is justified by law, or who by reason of a mistake of fact and not by reason of a mistake of law in good faith, believes himself to be justified by law, in doing it.]

উদাহরণ : ‘ক’, ‘খ’ কে এমন একটি কার্য সংঘটন করতে দেখে যা ‘ক’ এর নিকট খুন বলে প্রতীয়মান হয়। ‘ক’ সদবিশ্বাসে তার স্বীয় সর্বোচ্চ বিবেচনায় উক্ত কাজে খুনিগণকে গ্রেফতার করার জন্য আইনবলে সকল লোকের প্রতি অর্পণীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে ‘খ’ কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থিত করার উদ্দেশ্যে ‘খ’ কে আটক করে। ‘ক’ কোনো অপরাধ সংঘটিত করেনি, যদিও ফলস্বরূপ এরূপ প্রমাণিত হতে পারে যে, ‘খ’ আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে কাজটি করেছিল। [Illustration : A sees Z commit what appears to A to be a murder. A, in the exercise, to the best of his judgment, exerted in good faith of the power which the law gives to all persons of apprehending murderers in the act, seizes Z, in order to bring Z before the proper authorities. A has committed no offence, though it may turn out that Z was acting in self-defence.]

ধারা ৮০ : কোনো আইনানুগ কার্য সম্পাদনকালে দুর্ঘটনা [Accident in doing a lawful act] : দুর্ঘটনা বা দুর্ভাগ্যক্রমে এবং কোনো প্রকার অপরাধমূলক উদ্দেশ্য কিংবা অবগতি ব্যতিরেকে আইনানুগ পদ্ধতি আইনানুগ মাধ্যমের সাহায্যে এবং যথাযথ যত্ন ও সতর্কতার সাথে সম্পাদিত কোনো আইনানুগ কার্যই অপরাধ নয়। [Nothing is an offence which is done by accident or misfortune, and without any criminal intention or knowledge in the doing of a lawful act in a lawful manner by lawful means and with proper care and caution.]

উদাহরণ : ‘ক’ একটি কুঠার নিয়ে কাজ করছে, হঠাৎ তা কুঠারের মাথাটি খুলে গিয়ে উড়ে যায় এবং সন্নিকটে দণ্ডায়মান এক ব্যক্তিকে নিহত করে। এক্ষেত্রে যদি ‘ক’ এর পক্ষে যথাযথ সতর্কতার অভাব না থেকে থাকে, তাহলে তার কাজ মার্জনীয় হবে এবং অপরাধ হবে না। [Illustration : A is at work with a hatchet; the head flies off and kills a man who is standing by. Here if there was no want of proper caution on the part of A, his act is excusable and not an offence.]

ধারা ৮১ : সম্ভাব্য ক্ষতিকর কার্য, কিন্তু অপরাধমূলক উদ্দেশ্য ব্যতীত এবং ক্ষতি নিবারণকল্পে সম্পাদিত[Act likely to cause harm, but done without criminal intent and to prevent other harm] : ক্ষতিসাধন করতে পারে এরূপ সম্ভাবনা রয়েছে জেনে কোনো কিছু করা অপরাধ নয়, যদি তা কোনো ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে এবং মনুষ্য বা সম্পত্তির প্রতি অন্য কোনো ক্ষতি নিবারণ এড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়। [Nothing is an offence merely by reason of its being done with the knowledge that it is likely to cause harm, if it be done without any criminal intention to cause harm, and in good faith for the purpose of preventing or avoiding other harm to person or property.]

ব্যাখ্যা : যে ক্ষতিটি নিবারণ বা এড়াতে হবে, তা এতই আসন্ন বা প্রকট ছিলো কিনা এবং তা এমন প্রকৃতির ছিলো কিনা যার ফলে সম্পাদিত কার্যটি ক্ষতি করতে পারে জানা সত্ত্বেও তা করা বা করার মাধ্যমে ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমার্হ্য হবে; বাস্তব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই এই প্রশ্নটি মীমাংসা করতে হবে। [Explanation.-It is a question of fact in such a case whether the harm to be prevented or avoided was of such a nature and so imminent as to justify or excuse the risk of doing the act with the knowledge that it was likely to cause harm.]

উদাহরণসমূহ [Illustrations]:
ক) একটি জাহাজের কাপ্তান ‘ক’ নিজের কোনো দোষ বা ত্রুটি ব্যতিরেকে নিজেকে এরূপ অবস্থায় আপাতত দেখতে পান যে, তিনি তদীয় জাহাজের গতি পরিবর্তন না করলে বিশ বা ত্রিশজন আরোহীসহ একটি নৌকা ‘খ’ কে অনিবার্যভাবে ডুবিয়ে ফেলবেন এবং গতিপথ পরিবর্তন করলে তিনি দুইজন যাত্রীসহ একটি নৌকা ‘গ’ কে যা তিনি সম্ভবত বাঁচাতে পারেন অবশ্যই ডুবিয়ে ফেলবেন। এক্ষেত্রে যদি ‘ক’ নৌকার ‘খ’ এর যাত্রীদের বিপদ মুক্তির জন্য সদবিশ্বাসে এবং নৌকা ‘গ’ কে ডুবিয়ে ফেলার কোনো অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তার গতিপথ পরিবর্তন করেন তাহলে তিনি কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবেন না, যদিও তিনি ‘গ’ নৌকাটি ডুবিয়ে ফেলেন, যে কার্যের অনুরূপ পরিণতির সম্ভাবনা আছে বলেই তিনি জানতেন। যদি বস্তুত এটা প্রমাণিত হয় যে, তিনি যে বিপদ এড়ানোর ইচ্ছা করেছিলেন তা এরূপ ছিলো যার ফলে তৎকর্তৃক ‘গ’ নৌকাটি ডুবিয়ে ফেলার ঝুঁকি নেওয়া ক্ষমার যোগ্য। [(a) A, the captain of a steam vessel, suddenly and without any fault or negligence on his part, finds himself in such a position that, before he can stop his vessel, he must inevitably run down a boat B, with twenty or thirty passengers on board, unless he changes the course of his vessel, and that, by changing his course, he must incur risk of running down a boat C with only two passengers on board, which he may possibly clear. Here, if A alters his course without any intention to run down the boat C and in good faith for the purpose of avoiding the danger to the passengers in the boat B, he is not guilty of an offence, though he may run down the boat C by doing an act which he knew was likely to cause that effect, if it be found as a matter of fact that the danger which he intended to avoid was such as to excuse him in incurring the risk of running down C.]

খ) একটি প্রচণ্ড অগ্নিকাণ্ডের সময় আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই কারণে ক সন্নিহিত বাড়িঘর ভেঙে ফেলে। মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার আন্তরিক সদুদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়েই সে এই ব্যবস্থা অবলম্বন করে। এই ক্ষেত্রে প্রকৃত পরিস্থিতি বিবেচনায় যদি এরূপ প্রতিপন্ন হয় যে, সম্ভাব্য বা আসন্ন ক্ষতি নিবারণ করার উদ্দেশ্যে সে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলো, সেই সম্ভাব্য বিপদের দিক হতে তার গৃহীত ব্যবস্থা ক্ষমাযোগ্য, তাহলে ক সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য অপরাধী হবে না। [(b) A, is in a great fire, pulls down houses in order to prevent the conflagration from spreading. He does this with intention in good faith of saving human life or property. Here if it be found that the harm to be prevented was of such a nature and so imminent as to excuse A’s act, A is not guilty of the offence.]

ধারা ৮২ : নয় বছরের কম বয়স্ক শিশুর কার্য [Act of a child under nine years of age] : নয় বছরের কম বয়স্ক শিশুর কৃত কোনো কর্ম অপরাধ নয়।[Nothing is an offence which is done by a child under nine years of age.]

ধারা ৮৩ : নয় বছরের বেশি বয়স্ক ও বার বছরের কম বয়স্ক অপরিণত বোধশক্তি সম্পন্ন শিশুর কার্য [Act of a child above nine and under twelve of immature understanding] : নয় বছরের বেশি বয়স্ক ও বার বছরের কম বয়স্ক এমন শিশু কর্তৃক কৃত কিছুই অপরাধ হবে না। উক্ত অপরাধের ব্যাপারে যে শিশুর বোধশক্তি এতদুর পরিপক্কতা লাভ করেনি যে, সে স্বীয় আচরণের প্রকৃতি ও ফলাফল বিবেচনা করতে পারে। [Nothing is an offence which is done by a child above nine years of age and under twelve, who has not attained sufficient maturity of understanding to judge of the nature and consequences of his conduct on that occasion.]

ধারা ৮৪ : অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির কার্য [Act of a person of unsound mind] : এমন কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কৃত কোনো কিছুই অপরাধ নয়, যে ব্যক্তি অনুরূপ অপরাধ সংঘটনকালে মানসিক অসুস্থতার [unsoundness of mind] কারণে কার্যটির ধরন সম্পর্কে অবহিত হতে অপারগ বা সে আইনের দৃষ্টিতে ভুল বা আইনের পরিপন্থি কার্য করছে বলে জানার অযোগ্য।[Nothing is an offence which is done by a person who, at the time of doing it, by reason of unsoundness of mind, is incapable of knowing the nature of the act, or that he is doing what is either wrong or contrary to law.]

ধারা ৮৫ : অনিচ্ছাকৃত নেশাগ্রস্থতার কারণে বিচারশক্তি রহিত লোকের কার্য [Act of a person incapable of judgment by reason of intoxication caused against his will] : এমন কোনো ব্যক্তি কার্য সম্পাদনকালে প্রমত্ততাবশত [by reason of intoxication] কার্যটির প্রকৃতি বা সে যে কার্য করছে তা ভুল বা আইনের পরিপন্থি বলে চিনতে / বুঝতে পারার অযোগ্য হলে তৎকর্তৃক কৃত কোনো কিছুই অপরাধ নয়। তবে শর্ত থাকে যে, প্রমত্ততা সৃষ্টিকারী বস্তু তার অগোচরে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ওপরে প্রয়োগ করা হয়েছিল। [Nothing is an offence which is done by a person who, at the time of doing it, is, by reason of intoxication, incapable of knowing the nature of the act, or that he is doing what is either wrong, or contrary to law: provided that the thing which intoxicated him was administered to him without his knowledge or against his will.]

ধারা ৮৬ : যে অপরাধের ক্ষেত্রে বিশেষ জ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে, নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি কর্তৃক সে অপরাধ সংঘটন [Offence requiring a particular intent or knowledge committed by one who is intoxicated] : যেসব ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ জ্ঞান বা উদ্দেশ্য সহকারে করা না হলে কোনো কার্য অপরাধ হয় না, সেসব ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি উন্মত্ত অবস্থায় কোনো কার্য করলে তার এরূপ ব্যবস্থা করা হবে যেন উন্মত্ত না হলে তার যেরূপ জ্ঞান থাকত; তদ্রুপ একই জ্ঞান রয়েছে যদি না তার উন্মাদনা সৃষ্টিকারী বস্তুটি তার অজ্ঞাতে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে পরিবেশন করা হয়। [In cases where an act done is not an offence unless done with a particular knowledge or intent, a person who does the act in a state of intoxication shall be liable to be dealt with as if he had the same knowledge as he would have had if he had not been intoxicated, unless the thing which intoxicated him was administered to him without his knowledge or against his will.]

ধারা ৮৭ : বিনা উদ্দেশ্যে এবং মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত ঘটাইতে পারে বলিয়া না জানিয়া সম্মতিক্রমে সম্পাদিত কার্য [Act not intended and not known to be likely to cause death or grievous hurt, done by consent] : মৃত্যু ঘটানোর অথবা গুরুতর আঘাত করার উদ্দেশ্যে সম্পাদিত নয়, অথবা মৃত্যু ঘটাইতে পারে বা গুরুতর আঘাত করতে পারে এইরূপ না জানিয়া সম্পাদিত কোনো কার্য করার পর তাতে কোনো ক্ষতি হবার ফলে অপরাধ হবে না; অথবা আঠার বছরের অধিক বয়স্ক কোনো লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনুরূপ কার্যের ফল হতে উদ্ভূত ক্ষতি স্বীকার করার সম্মতিদানের পর, তার সম্মতি নিয়ে উক্তরূপ ক্ষতি সাধনের ইচ্ছা করিয়া কার্যটি করার পর তাতে কোনোরূপ ক্ষতি হবার ফলে কার্যটি অপরাধ হবে না; অথবা যে লোক কার্যটি করছে, সেই লোক কার্যটি করবার ফলে ক্ষতি সংঘটিত হতে পারে জানা সত্ত্বেও যে লোকের ক্ষতি হতে পারে, সেই লোকের ক্ষতির ঝুঁকি স্বীকারে সম্মতিক্রমে কার্যটি করার পর তাতে কোনোরূপ ক্ষতি হবার ফলে কার্যটি অপরাধ হবে না। [Nothing which is not intended to cause death, or grievous hurt, and which is not known by the doer to be likely to cause death, or grievous hurt, is an offence by reason of any harm which it may cause, or be intended by the doer to cause, to any person, above eighteen years of age, who has given consent, whether express or implied, to suffer that harm; or by reason of any harm which it may be known by the doer to be likely to cause to any such person who has consented to take the risk of that harm.]

উদাহরণ : ‘ক’ ও ‘খ’ আনন্দ উপভোগের উদ্দেশ্যে পরস্পরের সাথে তরবারি খেলা খেলতে সম্মত হয়। এ চুক্তিতে অসাধুতার ক্ষেত্র ব্যতিরেকে, অনুরূপ তরবারি খেলা খেলার সময় ঘটতে পারে এরূপ সম্ভাব্য যেকোনো ক্ষতি বহনে প্রত্যেকের সম্মতি রয়েছে বলে বুঝায় এবং যদি ‘ক’ সাধুভাবে উক্ত ক্রীড়া অনুষ্ঠানকালে ‘খ’ কে আঘাত করে, তাহলে ‘ক’ কোনো অপরাধ করেনি। [Illustration : A and Z agree to fence with each other for amusement. This agreement implies the consent of each to suffer any harm which in the course of such fencing, may be caused without foul play; and if A, while playing fairly, hurts Z, A commits no offence.]

ধারা ৮৮ : মৃত্যু ঘটানোর জন্য অভিপ্রেত নয় এমন কার্য ব্যক্তি বিশেষের উপকারার্থে সদবিশ্বাসে সম্মতি সহকারে সম্পাদন [Act not intended to cause death, done by consent in good faith for person’s benefit] : মৃত্যু ঘটানোর জন্য উদ্দিষ্ট নয় এমন কোনো কিছুই, যে ব্যক্তির উপকারার্থে কোনো ক্ষতিসাধন করা হয় এবং যে ব্যক্তি কোনো ক্ষতিসাধনের কারণে বা বহনের নিমিত্ত বা কোনো ক্ষতির ঝুঁকি গ্রহণের জন্য প্রকাশ্যে বা পরোক্ষভাবে সম্মতি দান করেছে, সে ব্যক্তির প্রতি কোনো ক্ষতি সংঘটনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংঘটকের জানা থাকে সে ক্ষতির কারণে অপরাধ হবে না। [Nothing, which is not intended to cause death, is an offence by reason of any harm which it may cause, or be intended by the doer to cause, or be known by the doer to be likely to cause, to any person for whose benefit it is done in good faith, and who has given a consent, whether express or implied, to suffer that harm, or to take the risk of that harm.]

উদাহরণ : সার্জন ‘ক’ একটি বিশেষ অস্ত্রোপচারের ফলে কঠিন রোগে আক্রান্ত রোগী ‘খ’ এর মৃত্যুরও সম্ভাবনা রয়েছে জেনে, তবে ‘খ’ এর মৃত্যু কামনা না করে এবং সদবিশ্বাসে ‘খ’ এর মঙ্গল কামনা করে ‘খ’ এর সম্মতিক্রমে ‘খ’ এর ওপর অস্ত্রোপচার সংঘটন করেন। ‘ক’ কোনো অপরাধ করেনি। [Illustration : A, a surgeon, knowing that a particular operation is likely to cause the death of Z, who suffers under the painful complaint, but not intending to cause Z’s death, and intending, in good faith Z’s benefit, performs that operation on Z, with Z’s consent. A has committed no offence.]

ধারা ৮৯ : অভিভাবক কর্তৃক বা অভিভাবকের সম্মতিক্রমে শিশু বা মস্তিষ্ক বিকৃত ব্যক্তির মঙ্গলার্থে সদবিশ্বাসে কৃত কার্য [Act done in good faith for benefit of child or insane person, by or by consent of guardian] : বার বছরের কম বয়স্ক বা মস্তিষ্ক বিকৃত ব্যক্তির অভিভাবক বা আইনানুগ তত্ত্বাবধানকারী অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক বা তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিক্রমে সদবিশ্বাসে কৃত কোনো কিছুই উক্ত ব্যক্তির প্রতি যে ক্ষতিসাধন করতে পারে তার জন্য বা সংঘটক কর্তৃক তৎপ্রতি যে ক্ষতি অভীষ্ট হয় সে ক্ষতির কারণে বা তৎপ্রতি যে ক্ষতি সাধিত হওয়ার সম্ভাবনা বলে সংঘটকের জানা থাকে সে ক্ষতির কারণে অপরাধ হবে না। শর্ত থাকে যে, [Nothing which is done in good faith for the benefit of a person under twelve years of age, or of unsound mind, by or by consent, either express or implied, of the guardian or other person having lawful charge of that person, is an offence by reason of any harm which it may cause, or be intended by the doer to cause or be known by the doer to be likely to cause to that person: Provided-]

প্রথমত: এ ব্যতিক্রম ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যু ঘটানোর প্রচেষ্টার প্রতি প্রযোজ্য হবে না। [Firstly.-That this exception shall not extend to the intentional causing of death, or to the attempting to cause death;]

দ্বিতীয়ত: এ ব্যতিক্রম এমন কোনো কিছুই সম্পাদনের প্রতি প্রযোজ্য হবে না, যা মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত এড়ানোর বা কোনো মারাত্মক রোগ পঙ্গুত্ব নিরাময় করার কার্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে মৃত্যু ঘটাতে পারে বলে উক্ত কার্য সম্পাদনকারী ব্যক্তি জানে। [Secondly.-That this exception shall not extend to the doing of anything which the person doing it knows to be likely to cause death, for any purpose other than the preventing of death or grievous hurt; or the curing of any grievous disease or infirmity;]

তৃতীয়ত: এ ব্যতিক্রম ইচ্ছাকৃতভাবে গুরুতর আঘাত প্রদান বা গুরুতর আঘাত প্রদানের উদ্যোগের প্রতি প্রযোজ্য হবে না, যদি না তার মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত নিবারণ করা কিংবা কোনো মারাত্মক রোগ পঙ্গুত্ব নিরাময় করার উদ্দেশ্যে সম্পাদিত হয়। [Thirdly.-That this exception shall not extent to the voluntary causing of grievous hurt, or to the attempting to cause grievous hurt, unless it be for the purpose of preventing death or grievous hurt, or the curing of any grievous disease or infirmity;]

চতুর্থত: এ ব্যতিক্রম এমন কোনো অপরাধ সংঘটনের সহায়তার প্রতি প্রযোজ্য হবে না, যে অপরাধ সংঘটনের প্রতি উক্ত ব্যতিক্রম প্রযোজ্য নয়। [Fourthly.-That this exception shall not extend to the abetment of any offence, to the committing of which offence it would not extend.]

উদাহরণ : ‘ক’ তার শিশুর মঙ্গলার্থে তার শিশুর সম্মতি ব্যতিরেকে, একজন চিকিৎসক দ্বারা পাথর বের করানোর উদ্দেশ্যে তার শিশুকে অস্ত্রোপচার করায়। ‘ক’ এর জানা ছিলো যে, উক্ত অস্ত্রোপচারের ফলে শিশুটির মৃত্যু ঘটতে পারে, কিন্তু শিশুকে মারার অভিপ্রায়ে কার্যটি করা হয়নি। যেহেতু শিশুটির রোগ নিরাময় করাই ছিলো তার উদ্দেশ্য। সেহেতু ‘ক’ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমের আওতাধীন হবে। [Illustration : A, in good faith, for his child’s benefit without his child’s consent, has his child cut for the stone by a surgeon, knowing it to be likely that the operation will cause the child’s death, but not intending to cause the child’s death. A is within the exception, inasmuch as his object was the cure of the child.]

ধারা ৯০ : ভীতি অথবা ভ্রান্ত ধারণার অধীনে প্রদত্তবলে বিদিত সম্মতি [Consent known to be given under fear or misconception] : যদি ক্ষতির ভয়ে বা তথ্যের ভ্রান্ত বর্ণনার কারণে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক সম্মতি প্রদান করা হয় এবং যদি উক্ত কার্য সম্পাদনকারী ব্যক্তি জানে বা তার বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, উক্ত সম্মতি অনুরূপ ভীতি কিংবা ভ্রান্ত ধারণার ফলে প্রদত্ত হয়েছিল তাহলে; অথবা [A consent is not such a consent as is intended by any section of this Code, if the consent is given by a person under fear of injury, or under a misconception of fact, and if the person doing the act knows, or has reason to believe, that the consent was given in consequence of such fear or misconception; or]

অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির সম্মতি[Consent of insane person] : যদি সম্মতি এরূপ কোনো ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত হয় যে, ব্যক্তি তার মনে অসুস্থতাহেতু বা নেশাগ্রস্থভাবে সে যাতে সম্মতি দান করে তার প্রকৃতি বা পরিণতি হৃদয়ঙ্গম করতে অক্ষম; অথবা [If the consent is given by a person who, from unsoundness of mind, or intoxication, is unable to understand the nature and consequence of that to which he gives his consent; or]

শিশুর সম্মতি [Consent of insane person] : প্রসঙ্গ অনুরূপ না বুঝালে যদি উক্ত সম্মতি বার বছর অপেক্ষা কম বয়স্ক কোনো ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত হয়, তাহলে কোনো সম্মতি এ বিধির যেকোনো ধারায় অভীষ্ট কোনো সম্মতি বলে গণ্য হবে না। [If the consent is given by a person who, from unsoundness of mind, or intoxication, is unable to understand the nature and consequence of that to which he gives his consent; or]

ধারা ৯১ : যেসব কার্য সাধিত ক্ষতি হতে স্বতন্ত্র্যভাবে অপরাধ বলে গণ্য সেসব কার্য বর্জন [Exclusion of acts which are offences independently of harm caused] : যেসব কার্য সম্মতিদানকারী ব্যক্তি বা যার পক্ষে সম্মতি দান করা হয় তার প্রতি যে ক্ষতি সংঘটন করতে পারে বা যে ক্ষতি সংঘটনের জন্য অভীষ্ট হয় বা ক্ষতি সংঘটন করার সম্ভাবনা থাকে তা হতে স্বতন্ত্রভাবে অপরাধ বলে বিবেচিত হয়, সেসব কার্যের ক্ষেত্রে ৮৭, ৮৮ এবং ৮৯ ধারা তিনটিতে ব্যতিক্রমসমূহ প্রযোজ্য নয়। [The exceptions in sections 87, 88 and 89 do not extend to acts which are offences independently of any harm which they may cause, or be intended to cause, or be known to be likely to cause, to the person giving the consent, or on whose behalf the consent is given.]

উদাহরণ : গর্ভপাত ঘটানো (নারীর জীবন রক্ষার উদ্দেশ্যে সরল বিশ্বাসে ঘটানোর ক্ষেত্র ব্যতীত) এটা নারীটির প্রতি যে ক্ষতিসাধন করতে পারে বা ক্ষতিসাধনের জন্য অভীষ্ট হতে পারে তা হতে স্বতন্ত্রভাবে একটি অপরাধ গণ্য হবে। অতএব, “এটা অনুরূপ ক্ষতির অজুহাতেই” অপরাধ বলে গণ্য হবে না এবং অনুরূপ গর্ভপাত ঘটানোর ব্যাপারে নারীটি বা তার অভিভাবকের সম্মতি উক্ত কার্য ন্যায়সঙ্গত প্রতিপন্ন করতে পারে না। [Illustration : Causing miscarriage (unless caused in good faith for the purpose of saving the life of woman) is an offence independently of any harm which it may cause or be intended to cause to the woman. Therefore, it is not an offence “by reason of such harm”; and the consent of the woman or of her guardian to the causing of such miscarriage does not justify the act.]

ধারা ৯২ : সম্মতি ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তির মঙ্গলার্থে সরল বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে কৃত কার্য [Act done in good faith for benefit of a person without consent] : যদি এরূপ পরিস্থিতি এরূপ হয় যে, কোনো ব্যক্তির পক্ষে সম্মতি দান করা অসম্ভব বা যদি উক্ত ব্যক্তি সম্মতি দান করতে অপারগ হয় এবং তার এরূপ কোনো অভিভাবক বা আইনানুগ দায়িত্বসম্পন্ন অন্য কোনো ব্যক্তি না থাকে, যার নিকট থেকে সফলতার সাথে করণীয় বস্তুর জন্য যথাসময়ে সম্মতি অর্জন করা সম্ভব হয়, তাহলে উক্ত ব্যক্তির সম্মতি ব্যতিরেকেই তার মঙ্গলার্থে সরল বিশ্বাসে কোনো কার্য করার কারণে উক্ত ব্যক্তির ক্ষতি সাধিত হতে পারে বিধায় উক্ত কার্য অপরাধ নয়। তবে শর্ত থাকে যে, [Nothing is an offence by reason of any harm which it may cause to a person for whose benefit it is done in good faith, even without that person’s consent, if the circumstances are such that it is impossible for that person to signify consent, or if that person is incapable of giving consent, and has no guardian or other person in lawful charge of him from whom it is possible to obtain consent in time for the thing to be done with benefit : Provided-]

প্রথমত: ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যু ঘটালে সেক্ষেত্রে বা ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যু সংঘটনের প্রচেষ্টা করলে সেক্ষেত্রে এ ব্যতিক্রম প্রযোজ্য হবে না। [Firstly.-That this exception shall not extend to the intentional causing of death, or the attempting to cause death;]

দ্বিতীয়ত: এ ব্যতিক্রম এমন কিছুই সম্পাদনের প্রতি প্রযোজ্য হবে না, যা মৃত্যু নিরোধের বা গুরুতর আঘাত এড়ানোর বা কোনো মারাত্মক ব্যাধি নিরাময় বা পঙ্গুত্ব নিরাময় করার কার্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে মৃত্যু ঘটাতে পারে বলে উক্ত কার্য সম্পাদনকারী ব্যক্তি জানে। [Secondly.-That this exception shall not extend to the doing of anything which the person doing it knows to be likely to cause death, for any purpose other than the preventing of death or grievous hurt, or the curing of any grievous disease or infirmity;]

তৃতীয়ত: এ ব্যতিক্রম মৃত্যু নিরোধের বা আঘাত এড়ানোর উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত প্রদান বা আঘাত প্রদানের উদ্যোগের প্রতি প্রযোজ্য হবে না। [Thirdly.-That this exception shall not extend to the voluntary causing of hurt, or to the attempting to cause hurt, for any purpose other than the preventing of death or hurt;]

চতুর্থত: এ ব্যতিক্রম এমন কোনো অপরাধ সংঘটনের সহায়তার বা যোগসাজশের প্রতি প্রযোজ্য হবে না, যে অপরাধ সংঘটনের প্রতি এটা প্রযোজ্য হবে না। [Fourthly.-That this exception shall not extend to the abetment of any offence, to the committing of which offence it would not extend.]

উদাহরণসমূহ [Illustrations]:
ক) ‘ঙ’ তদীয় ঘোড়া হতে পড়ে যায় এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ‘ক’ একজন চিকিৎসক। তিনি ‘ঙ’ কে পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, তার মাথার খুলিতে অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসা করা আশু প্রয়োজন। সে অনুযায়ী ‘ক’, ‘ঙ’ এর মৃত্যু ঘটানোর উদ্দেশ্যে নয়, বরং তার উপকার হবে এরূপ আন্তরিক সদিচ্ছায় বা সরল বিশ্বাসে ‘ঙ’ এর স্বয়ং বিচার করার ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের পূর্বেই তার মাথার খুলিতে অস্ত্রোপচার করেন। ‘ক’ এর কার্যটি অপরাধ বলে গণ্য হবে না। [(a) Z is thrown from his horse, and is insensible. A, a surgeon, finds that Z requires to be trepanned. A not intending Z’s death but in good faith for Z’s benefit, performs the trepan before Z recovers his power of judging for himself. A has committed no offence.]

খ) গুলির ফলে ‘ঙ’ নিহত হবে জেনে বাঘের কবলে পতিত ‘ঙ’ কে নিহত করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং তাকে বাঘের কবল থেকে বাঁচানোর বা উদ্ধার করার আন্তরিক সদিচ্ছা থেকে ‘ক’ বাঘটির প্রতি গুলি ছোড়ে। গুলির ফলে ‘ঙ’ মারাত্মকভাবে আহত ও নিহত হয়। ‘ক’ এর এরূপ গুলিবর্ষণ অপরাধমূলক হবে না। [(b) Z is carried off by a tiger. A fires at the tiger knowing it to be likely that the shot may kill Z, but not intending to kill Z, and in good faith intending Z’s benefit. A’s ball gives Z a mortal wound. A has committed no offence.]

গ) সার্জন ‘ক’ একটি শিশুকে এমনি একটি দুর্ঘটনায় আপতিত দেখতে পান যে, অবিলম্বে অস্ত্রোপচার সংঘটন না করলে উক্ত দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতিটি এমন যে, শিশুর অভিভাবকের নিকট আবেদন করারও সময় নেই। ‘ক’ সদ্বিশ্বাসে শিশুর মঙ্গল কামনা করে শিশুটির অনুরোধ সত্ত্বেও অস্ত্রোপচার সংঘটন করে। ‘ক’ কোনো অপরাধ করেনি। [(c) A, a surgeon, sees a child suffer an accident which is likely to prove fatal unless an operation be immediately performed. There is no time to apply to the child’s guardian. A performs the operation inspite of the entreaties of the child, intending, in good faith, the child’s benefit. A has committed no offence.]

ঘ) ‘ক’ শিশু ‘য’ এর সাথে একটি জ্বলন্ত ঘরে রয়েছে। নিচে লোকজন কম্বল ধরে রেখেছে। ‘ক’ শিশুটিকে গৃহচূড়া হতে নিক্ষেপ করে। ‘ক’ জানত যে উক্ত পতন শিশুটির মৃত্যু ঘটাতে পারে। তবে শিশুটির মৃত্যু কামনা করে এবং সরল বিশ্বাসে শিশুর মঙ্গল কামনা করে সে উক্ত কার্য করে। এক্ষেত্রে যদি এমনও হয় যে, উক্ত পতনের ফলে শিশুটি মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তথাপিও ‘ক’ কোনো অপরাধ করে নি। [(d) A is in a house which is on fire, with Z, a child. People below hold out a blanket. A drops the child from the housetop, knowing it to be likely that the fall may kill the child, but not intending to kill the child, and intending, in good faith, the child’s benefit. Here even if the child is killed by the fall, A has committed no offence.]

ব্যাখ্যা : শুধু ৮৮, ৮৯ ও ৯২ ধারা তিনটির তাৎপর্যাধীনে, শুধু আর্থিক উপকার কোনো উপকার হবে না। [Explanation.-Mere pecuniary benefit is not benefit within the meaning of sections 88, 89 and 92.]

ধারা ৯৩ : সদবিশ্বাসে কৃত যোগাযোগ [Communication made in good faith] : যদি কোনো ব্যক্তির উপকারার্থে কোনো সংবাদ পরিবাহিত হয় তাহলে যে ব্যক্তির নিকট উক্ত সংবাদ পরিবাহিত হয় সে ব্যক্তির কোনো ক্ষতি সাধিত হতে পারে বিধায় সদবিশ্বাসে সম্পাদিত কোনো সংবাদ প্রদান অপরাধ নয়। [No communication made in good faith is an offence by reason of any harm to the person to whom it is made, if it is made for the benefit of that person.]

উদাহরণ : সার্জন ‘ক’ সদবিশ্বাসে একটি রোগীকে তার মত জানায় যে, সে বাঁচবে না। এতে মর্মান্তিক আঘাত প্রাপ্তির ফলে রোগীটির মৃত্যু হয়। ‘ক’ কোনো অপরাধ করেনি। যদিও তিনি জানতেন যে, উক্ত যোগাযোগের ফলে রোগীটি মৃত্যুমুখে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। [Illustration : A, a surgeon, in good faith, communicates to a patient his opinion that he cannot live. The patient dies in consequence of the shock. A has committed no offence, though he knew it to be likely that the communication might cause the patient’s death.]

ধারা ৯৪ : হুমকির ফলে বাধ্য হয়ে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক কৃতকার্য [Act to which a person is compelled by threats] : খুন ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দণ্ডনীয় অপরাধসমূহ ব্যতিরেকে এরূপ কোনো কিছুই অপরাধ নয় যা এমন কোনো ব্যক্তি কর্তৃক করা হয় যে ব্যক্তিকে এরূপ ভীতি প্রদর্শন করে উক্ত কার্য করতে বাধ্য করা হয় যে, উক্ত কার্য সংঘটনের সময় অনুরূপ ভীতি প্রদর্শন এ মর্মে যৌক্তিকভাবে আশংকা সৃষ্টি করে যে, প্রকারান্তরে মৃত্যুই হবে অনুরূপ পরিণতি। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত কার্য সম্পাদনকারী ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা তার তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতে স্বল্পতর ক্ষতির ন্যায়সঙ্গত আশঙ্কার কারণে নিজেকে এরূপ পরিস্থিতিতে আপতিত করে যে কারণে সে অনুরূপ হুমকির অধীনে হয়েছিল। [Except murder, and offences against the State punishable with death, nothing is an offence which is done by a person who is compelled to do it by threats, which, at the time of doing it, reasonably cause the apprehension that instant death to that person will otherwise be the consequence: Provided the person doing the act did not of his own accord, or from a reasonable apprehension of harm to himself short of instant death, place himself in the situation by which he became subject to such constraint.]

ব্যাখ্যা ১ : যে ব্যক্তি নিজের ইচ্ছায় বা প্রহৃত হওয়ার ভয়ে একদল ডাকাতের চরিত্র সম্পর্কে অবহিত থাকা সত্ত্বেও উক্ত ডাকাত দলের সাথে যোগদান করে, সে তার সহচরগণ কর্তৃক আইনত অপরাধ বলে গণ্য কোনো কিছু করার জন্য বাধ্য হওয়ার অজুহাতেই এ ব্যতিক্রমটির সুযোগ গ্রহণের অধিকারী হবে না। [Explanation 1.-A person who, of his own accord, or by reason of a threat of being beaten, joins a gang of dacoits, knowing their character, is not entitled to the benefit of this exception on the ground of his having been compelled by his associates to do anything that is an offence by law.]

ব্যাখ্যা ২ : যে ব্যক্তিকে একদল ডাকাত আইনত অপরাধ বলে গণ্য কোনো কিছু সম্পাদনের জন্য অবরোধ ও তাৎক্ষণিক মৃত্যুর ভীতি প্রদর্শন করে বাধ্য করে। দৃষ্টান্তস্বরূপ একজন কর্মকারকে তার যন্ত্রপাতি নিয়ে ডাকাতগণ কর্তৃক কোনো গৃহে প্রবেশ ও তা লুটতরাজ করার জন্য উক্ত গৃহের দরজা জোরপূর্বক ভাঙ্গার জন্য বাধ্য করা হয়, সে ব্যক্তি এ ব্যতিক্রমটির আশ্রয় লাভের অধিকারী হবে। [Explanation 2.-A person seized by a gang of dacoits, and forced by threat of instant death, to do a thing which is an offence by law; for example, a smith compelled to take his tools and to force the door of a house for the dacoits to enter and plunder it, is entitled to the benefit of this exception.]

ধারা ৯৫ : সামান্য ক্ষতিকারক কার্য [Act causing slight harm] : কোনো কিছুই এ কারণে অপরাধ নয় যে, তা ক্ষতিসাধন করে বা সাধন করার জন্য প্রণোদিত হয় বা সাধন করার সম্ভাবনা থাকে, যদি উক্ত ক্ষতি এরূপ সামান্য হয় যে, সাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও মেজাজসম্পন্ন কোনো ব্যক্তিই অনুরূপ ক্ষতি সম্পর্কে অভিযোগ করবে না। [Nothing is an offence by reason that it causes, or that it is intended to cause, or that it is known to be likely to cause, any harm, if that harm, is so slight that no person of ordinary sense and temper would complain of such harm.]

[ধারা ৯৬-১০৬ পর্যন্ত মূল ধারাগুলো আগের অংশে ছিলো বিধায় এখানে নতুন করে যুক্ত করা হলো না। ৯৬-১০৬ ধারাসমূহ ব্যক্তিগত আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত হলেও তা কিন্তু মূলত দণ্ডবিধির ‘সাধারণ ব্যতিক্রম’ এর অংশ – এটা ভুলবেন না।]

বিগত সালের প্রশ্নসমূহ

প্রশ্ন নং : ৫
ক. সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ কি কি? কোনো একটি কাজ কোনো একটি ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত দাবি করা হলে এ দাবি প্রমাণের দায়িত্ব কার ওপর বর্তায়? [জুডি. : ২০০৭]

খ. একজন ডাক্তার সরল বিশ্বাসে তার রোগীকে জানায় যে সে বাঁচবে না। এ কথা শোনার পর রোগীটি মানসিক আঘাতে মারা যায়। ডাক্তার জানতেন যে, একথা শোনার পর রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের কোনো অপরাধ হবে কি? দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর সংশ্লি­ষ্ট ধারা উল্লে­খপূর্বক উত্তর দিন। [জুডি. : ২০০৭]
অথবা
‘ক’ একজন শল্য চিকিৎসক, সরল বিশ্বাসে তিনি তার রোগীকে জানান যে, সে আর বাঁচবে না। এ উক্তিতে মর্মাহত হয়ে রোগী মারা যায়। [২০১৭]

গ. ‘ক’ ব্যথার কষ্ট নিয়ে একজন সার্জনের নিকট এলো, যিনি অস্ত্রপচারের ফলে ‘ক’ এর মৃত্যু হতে পারে – এটা জেনেও ‘ক’ এর মৃত্যু ঘটানোর কোনো অভিপ্রায় ছাড়াই সরল বিশ্বাসে ‘ক’ এর মঙ্গলার্থে অস্ত্রপচারটি করেন। উক্ত অস্ত্রপচারের পর ‘ক’ মারা যায়। ‘ক’ এর মৃত্যুর জন্য সার্জনকে দায়ী করা যায় কি? ব্যাখ্যা করুন। [জুডি. : ২০১৪]

প্রশ্ন নং : ৫(ক)
সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ কি কি? কোনো একটি কাজ কোনো একটি ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত দাবী করা হলে এ দাবি প্রমানের দায়িত্ব কার উপর বর্তায়?

৫(ক) নং প্রশ্নের উত্তর :
দণ্ডবিধির ভাষ্যে, সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ বলতে দণ্ডবিধির সেই বিধানগুলো বোঝায় যেগুলোর অধীনে কোনো ব্যক্তি যদি কোনো ‘অপরাধ’ করে তবে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে না। দণ্ডবিধির চর্তুথ অধ্যায়ে সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ ধারা ৭৬-১০৬ পর্যন্ত আলোচিত হয়েছে। এই অধ্যায় সম্পর্কে একটি ভিত্তিমূলক কথা বলা আছে বিধিটির ৬ ধারায়। বলা হয়েছে যে, দণ্ডবিধির সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ পুরো দণ্ডবিধির বর্ণিত সমস্ত সংজ্ঞা বা উদাহরণে প্রযোজ্য বলে গণ্য করতে হবে, যদিওবা তা উক্ত ধারায় বর্ণিত বা উল্লেখ নাও থাকে। যাইহোক, দণ্ডবিধির সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহের সাধারণ ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিচে তুলে ধরা হলো।

১. সরকারি কর্মচারী বা আদালতের কাজ এবং আদালতের নির্দেশে কৃত কাজ সম্পর্কে: দণ্ডবিধির ধারা ৭৬ অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কোনো কাজ সরল বিশ্বাসে করলে, যা করতে কিনা সে আইনত বাধ্য, সেরূপ ক্ষেত্রে তা অপরাধের ব্যতিক্রমের আওতায় পড়বে। অন্যদিকে, ধারা ৭৭ অনুসারে আদালতের কোনো নির্দেশ বা কাজ অথবা ৭৮ ধারা অনুসারে আদালতের নির্দেশ অনুসারে কৃত কোনো কাজও অপরাধের ব্যতিক্রমের আওতায় পড়বে।

২. কোন আইনানুগ কার্য সম্পাদনকালে দুঘর্টনা: ধারা ৮০ অনুসারে কোনো অপরাধমূলক অভিপ্রায় ব্যতীত আইনানুগ [Lawful act] কাজের মাধ্যমে কোনো কার্য অপরাধ নয়।

৩. অপরাধমূলক উদ্দেশ্য ব্যতীত এবং অন্যবিধ ক্ষতি নিবারণ এর উদ্দেশ্যে কৃত কাজ: ধারা ৮১ অনুযায়ী, যদি কেউ ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্য ব্যতীত এবং মানুষ বা সম্পত্তির ক্ষতি এড়ানোর উদ্দেশ্যে এমন কোনো কাজ করে যাতে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও তা অপরাধের ব্যতিক্রম হবে।

৪. অল্পবয়সী ও অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির কার্য : ৮২ ধারা অনুসারে নয় বছরের কম বয়সী শিশুর দ্বারা কোনো কাজ অপরাধ হবে না। ধারা ৮৩ অনুযায়ী, ৯ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুর কৃত কাজ অপরাধ গণ্য হবে না যদি, উক্ত অপরাধের ব্যাপারে সেই শিশুর বোধ শক্তি কম থাকে এবং নিজ কাজের পরিণতি সম্পর্কে উপলব্ধি না থাকে। অন্যদিকে, ৮৪ ধারা অনুসারে কোনো অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির [Unsound mind] করা কোনো কাজও দণ্ডবিধি অনুসারে কোনো অপরাধ নয়।

৫. নেশাগ্রস্থতা : ৮৫ ও ৮৬ ধারা দুইটির মূল সারবস্তু হলো – কোনো ব্যক্তি অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনোকিছুর দ্বারা নেশাগ্রস্থ হয়ে থাকলে ঐ অবস্থায় কৃত কাজ অপরাধ না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে নেশাগ্রস্থ হয়ে কৃত কার্য অপরাধ হবে।

৬. মৃত্যু ঘটানোর অভিপ্রায়হীন ভাবে কৃত কাজ: ধারা ৮৭ অনুযায়ী, ১৮ বছরের বেশী বয়সী কোনো ব্যক্তি যদি ক্ষতির ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্মতি প্রদান করে কোনো কাজের, এবং সেটিতে যদি মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত ঘটানোর অভিপ্রায়হীনভাবে কৃত কাজের দ্বারা উক্ত ব্যক্তির ক্ষতি হলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে, সেক্ষেত্রে সেটিও দণ্ডবিধির সাধারণ ব্যতিক্রমের আওতায় পড়বে। অন্যদিকে, ধারা ৯২ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির মঙ্গলার্থে তার কোন সম্মতি ব্যতীতই সদবিশ্বাসে এমন কাজ করে যার ফলে উক্ত ব্যক্তির ক্ষতির সম্ভবনা থাকে, এমন কার্য অপরাধ নয়।

৭. কোনো ব্যক্তির মঙ্গলার্থে সদবিশ্বাসে অভিপ্রায়হীন ভাবে কৃত ক্ষতিসাধন : ৮৮ ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তির মঙ্গলার্থে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে সদবিশ্বাসে এমন কোনা কার্য করে যাতে উক্ত ব্যক্তির ক্ষতির সম্ভবনা থাকে, এমন কার্যও অপরাধ নয়। অন্যদিকে, ধারা ৮৯ অনুযায়ী, বার বছরের চেয়ে কমবয়সী বা অপ্রকৃতিস্থ কোনো ব্যক্তির মঙ্গলার্থে তার অভিভাবক বা আইনানুগ তত্ত্বাবধানকারীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিক্রমে, সদবিশ্বাসে কৃত কোনো কাজ যার ফলে উক্ত ব্যক্তির ক্ষতি হবার সম্ভবনা রয়েছে বলে সংঘটক অবগত থাকে তবুও সেই কাজ অপরাধ নয়। যেমন, অভিভাবক কর্তৃক শিশুর মঙ্গলার্থে অস্ত্রপচারের অনুমতি প্রদান এবং তাতে কোনো ক্ষতি হলেও সেটিও দণ্ডবিধির সাধারণ ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত হবে। অনুরূপ ধারণা ৯২ ও ৯৩ ধারাতেও উল্লেখ আছে। ৯৩ ধারায় বলা আছে যে, একজিন চিকিৎসক তার রোগীর ব্যাপারে তথ্য প্রদান করতে পারে, যে তথ্যে তার আঘাত বা অন্যরূপ ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

৮. ভীতি প্রদর্শিত হয়ে ভীত ব্যক্তির কৃত কাজ : ধারা ৯৪ অনুসারে যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ভীতি প্রদর্শন এর দ্বারা বাধ্য হয়ে খুন ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডনীয় অপরাধ ব্যতিরেকে কৃত কোনো কার্যও অপরাধ হবে না। অন্যদিকে, ৯৫ ধারা অনুসারে, যদি কোনো কার্যের ফলে এমন ক্ষতিসাধন হয় বা ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে যা সম্পর্কে সাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও মেজাজের কোনো ব্যক্তিই অভিযোগ করবে না, তবে সেটাও অপরাধ নয়।

৯. ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষায় কৃত কার্য: ৯৬ ও ৯৭ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি কর্তৃক নিজের বা পরের দেহ বা সম্পত্তি রক্ষায় ব্যক্তিগত আত্মরক্ষার প্রয়োজনে কৃত কাজ অপরাধ নয়। এই আত্মরক্ষার আরম্ভ ও স্থিতিকাল ধারা ১০২ ও ধারা ১০৫ এ বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া, ধারা ১০০ ও ১০৩ অনুসারে এই অধিকার প্রয়োগ দ্বারা মৃত্যু ঘটালেও অপরাধ হবে না। তবে, ব্যক্তিগত আত্মরক্ষার অধিকার ৯৯ ধারার ব্যতিক্রমসাপেক্ষে পাঠ করতে হবে।

প্রমাণের দায়িত্ব সম্পর্কে সাক্ষ্য আইনে আলোচনা রয়েছে ১০১ ধারা থেকে ১১৪ ধারা পর্যন্ত। এই ধারাগুলোর ভেতরে ১০১ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি যে ঘটনার অস্তিত্ব দাবি করে তা প্রমাণের দায়িত্ব ঐ ব্যক্তির। অর্থাৎ আদালতে যে ব্যক্তি কোনো দাবি উত্থাপন করবেন সে ব্যক্তি সে দাবির অস্তিত্ব প্রমাণ করবেন। আবার, সাক্ষ্য আইনের ১০৫ ধারা বর্ণিত আছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো অপরাধ করে যা দণ্ডবিধির চতুর্থ অধ্যায়ের সাধারণ ব্যতিক্রমের মধ্যে গণ্য হয়, তবে তার দ্বারা সংঘটিত অপরাধ কোন ব্যতিক্রমের শর্তের অধীন তা প্রমাণ করার দায়িত্ব সে ব্যক্তির নিজেরই। উদাহরণস্বরূপ, কোনো ৯ বছরের কম বয়সী শিশু যদি কোনো ব্যক্তিকে ঘুষি মেরে তার দাঁত ফেলে দেয়, তবে তা দণ্ডবিধি অনুসারে গুরুতর আঘাতের অপরাধ। কিন্তু, এরূপ কোনো ঘটনায় উক্ত ভিকটিম যদি কোনো মামলা করে থাকেন গুরুতর আঘাত সংক্রান্ত, তাহলে উক্ত আঘাত প্রদানকারী শিশুটিকেই প্রমাণ করতে হবে যে, তার বয়স উক্ত ঘটনা সংঘটনের সময় ৯ বছরের কম ছিলো। সুতরাং, সে এই অপরাধের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে পারে। এক্ষেত্রে, দণ্ডবিধির সাধারণ ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে সেই তথ্য প্রমাণের দায়ভারটি আবশ্যিকভাবে উক্ত শিশুর।

উপরের সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, দণ্ডবিধির সাধারণ ব্যতিক্রমের অন্তর্ভুক্ত কোনো বিষয়াদি প্রমাণ করার দায়িত্ব যিনি দাবি করবেন যে, তার অপরাধটি ব্যতিক্রমের মধ্যে পড়ে, তারই দায়িত্ব সেটি প্রমাণ করার।

এই প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে নির্দেশনা :
১. প্রশ্নটি জুডিসিয়ারি পরীক্ষায় এসেছিলো; বার কাউন্সিলে কখনো ‘সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ’ বিষয়বস্তুতে সরাসরি প্রশ্ন আসেনি এ যাবৎ। তবুও এটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে আমাদের কাছে। সে কারণে এখানে যুক্ত করা হয়েছে।
২. এই উত্তরটিতে ৮৫৪টি শব্দ আছে। শব্দ আমাদের বিবেচনায় সামান্য বেশি। তবে আশা করি যে, প্রশ্নের শেষাংশ অর্থাৎ প্রমাণের দায়ভার সংক্রান্ত অংশটি বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় দেবে না; দিলেও সঙ্গতভাবে দেবে। ফলে, শব্দসংখ্যার পেছনে বেশি গবেষণা না করে উত্তরটি ভালো করে বুঝে নিয়ে রাখুন, যেন পরীক্ষায় যেকোনোভাবে আসলে উত্তর করতে পারেন।
৩. কতটা গুরুত্ব দেওয়া দরকার সে সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয় যে, সাধারণভাবে যেই টপিকটি ধরবেন সেই টপিকটির আদ্যোপান্ত পড়ে যাবার কথা বারংবারই বলে এসেছি। সেক্ষেত্রে এই প্রশ্নটির গুরুত্ব অপরিসীম।
৪. এর গুরুত্ব অপরিসীম বিবেচনাতেই জুডিসিয়ারিতে আসা ব্যতিক্রম অংশ থেকে আসা দুইটি ঘটনাভিত্তিক বিশ্লেষণী প্রশ্নও এরও পরে যুক্ত করে দেওয়া আছে। উক্ত ঘটনাভিত্তিক প্রশ্ন মূলত ব্যতিক্রম সংক্রান্ত ধারাগুলোরই উদাহরণ থেকে আসা প্রশ্ন। ঘাবড়ানোর কিছু নেই ফলত। বিভিন্ন ধারা থেকে উদাহরণগুলো দেখে যেতে পারলে আসলে মন্দ নয়। যেমন, আইনানুগ কাজ বা Lawful act এর সময় দুর্ঘটনাবশত কোনো ব্যক্তি আহত বা নিহত হলে সেটি অপরাধের ব্যতিক্রমের আওতায় পড়ে। সংশ্লিষ্ট ধারাতেই উদাহরণ দেওয়া আছে যে, একজন কাঠুরে কাজ করার সময় [এটি একটি আইনানুগ কাজ বা Lawful act] কুঠার থেকে ফলাটি বিচ্ছিন্ন হয়ে কাউকে আঘাত করে এবং উক্ত ব্যক্তি নিহত হয়। এক্ষেত্রে এটি কোনো অপরাধ নয়; বরং অপরাধের ব্যতিক্রম হবে।

প্রশ্ন নং : ৫(খ)
একজন ডাক্তার সরল বিশ্বাসে তার রোগীকে জানায় যে সে বাঁচবে না। এ কথা শোনার পর রোগীটি মানসিক আঘাতে মারা যায়। ডাক্তার জানতেন যে, একথা শোনার পর রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের কোনো অপরাধ হবে কি? দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর সংশ্লি­ষ্ট ধারা উল্লে­খপূর্বক উত্তর দিন। [জুডি. : ২০০৭]

অথবা
‘ক’ একজন শল্য চিকিৎসক, সরল বিশ্বাসে তিনি তার রোগীকে জানান যে, সে আর বাঁচবে না। এ উক্তিতে মর্মাহত হয়ে রোগী মারা যায়। [২০১৭]

৫(খ) নং প্রশ্নের উত্তর :
প্রশ্নে, ডাক্তার তার রোগীকে সদবিশ্বাসে জানিয়েছেন যে, তিনি (রোগীটি) আর বাঁচবে না। একথার পরিপ্রেক্ষিতে রোগীটি মারা যান। এক্ষেত্রে, ডাক্তার এর সংবাদ পরিবহনটিই মূলত রোগীর মৃত্যুর কারণ।

দণ্ডবিধির ধারা ৯৩ অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তির মঙ্গলার্থে সদবিশ্বাসে কোন সংবাদ পরিবাহিত হয়, যে ব্যক্তিকে সংবাদ পরিবহন করা হয় তার ক্ষতি (harm) সাধিত হতে পারে জানা সত্বেও, সংবাদ পরিবহন অপরাধ হবে না। এ ধারার মূলত দুইটি উপাদান-
১. কোনো ব্যক্তির মঙ্গলার্থে সদবিশ্বাসে সংবাদ বা তথ্য প্রদান হতে হবে।
২. সংবাদ পরিবহনের ফলে উক্ত ব্যক্তির ক্ষতি(harm) হবার সম্ভাবনা রয়েছে তা সংবাদদাতা জেনে থাকবেন।

উপরোক্ত ধারার আলোকে ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ডাক্তার রোগীর মঙ্গলার্থেই সদবিশ্বাসে তার মৃত্যুর সংবাদ তাকে দিয়েছেন এবং তিনি জানতেন যে, এর ফলে তিনি (রোগীটি) মারা যেতে পারেন। সুতরাং তার এই কার্য দ-বিধির ধারা ৯৩ অনুসারে অপরাধ মর্মে গণ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে, ক্ষতি (harm) বলতে ক্ষতিকর মানসিক প্রতিক্রিয়া বোঝায়। (AIR 1966 SC 1773)

প্রশ্ন নং : ৫(গ)
‘ক’ ব্যথার কষ্ট নিয়ে একজন সার্জনের নিকট এলো, যিনি অস্ত্রপচারের ফলে ‘ক’ এর মৃত্যু হতে পারে – এটা জেনেও ‘ক’ এর মৃত্যু ঘটানোর কোনো অভিপ্রায় ছাড়াই সরল বিশ্বাসে ‘ক’ এর মঙ্গলার্থে অস্ত্রপচারটি করেন। উক্ত অস্ত্রপচারের পর ‘ক’ মারা যায়। ‘ক’ এর মৃত্যুর জন্য সার্জনকে দায়ী করা যায় কি? ব্যাখ্যা করুন। [জুডি. : ২০১৪]

৫(গ) নং প্রশ্নের উত্তর :
প্রশ্নে জানতে চাওয়া সমস্যাটি মূলত দণ্ডবিধির ৮৮ ধারায় উল্লেখ আছে উদাহরণ আকারে। দণ্ডবিধির চতুর্থ অধ্যায়ে বর্ণিত সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহের অধীন আলোচিত ধারা ৮৮ অনুসারে যদি কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তির মঙ্গলার্থে –
১. সদবিশ্বাসে কোনো কাজ করে
২. মৃত্যু ঘটাবার অভিপ্রায় ছাড়াই কাজটি করেন এবং
৩. কাজটির ফলে উক্ত ব্যক্তির ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে এবং সেই ক্ষতির ঝুঁকি গ্রহণের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতি থাকে তবে, উক্ত কার্য সংঘটক ব্যক্তির কাজটি ক্ষতির কারণে অপরাধ হবে না। উক্ত ৮৮ ধারার মূল উপাদানসমূহ হলো –

ক. কাজটি হবে ব্যক্তিটির মঙ্গলার্থে।
খ. কাজটি সদবিশ্বাসে করা হবে।
গ. মৃত্যু ঘটানোর অভিপ্রায়হীনভাবে কাজটি করা হবে।

৪. কাজটির ফলে, সম্ভব্য ক্ষতির ঝুঁকির জন্য ব্যক্তির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতি থাকবে। AIR 1935 Allahabad 282 মামলায় সিদ্ধান্ত হয়, মৃত্যু ঘটাবার অভিপ্রায় ব্যতীত যেকোনো রূপ আঘাত বা ক্ষতি করা যায় যে কোনো ব্যক্তির, তবে, সেই আঘাতেরও একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা রয়েছে-

ক. কাজটি উক্ত ব্যক্তির উপকারার্থে হতে হবে, হতে পারে শারিরীক বা অন্য রকম উপকার।
খ. কাজটি সরল বিশ্বাসে করা হবে।

চিকিৎসার ক্ষেত্রে, রোগী ডাক্তারের নিকট নিজেকে সমর্পন করে, তখন সেই রোগী তার উপকারার্থে ডাক্তারকে যেকোনো কাজ করার অনুমতি দেয়।

উক্ত ধারার আলোকে ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, ‘ক’ ব্যথার জন্য ডাক্তারের শরনাপন্ন হন, অর্থাৎ নিজেকে সমর্পণ করেন এবং তার চিকিৎসার জন্য যে কোনো কাজ করার জন্য প্রত্যক্ষ ও প্ররোক্ষ অনুমতি দিয়েছেন। ডাক্তার রোগীর মঙ্গলার্থে সদবিশ্বাসে অস্ত্রপাচার করেন। রোগী মারা যান। এক্ষেত্রে দণ্ডবিধির ধারা ৮৮ অনুসারে ডাক্তারের কাজটি অপরাধ নয়।

লিখিত পরীক্ষার জন্য

আইনকানুন একাডেমিতে প্রস্তুতি নিন, ঘরে বসেই!!
থাকছে লাইভ ভিডিও ক্লাস
খাতা দেখবেন সহকারী জজগণ ও অন্যান্য শিক্ষকগণ :: থাকছে মুরাদ মোর্শেদ স্যার এর গাইডলাইন আর কাউন্সেলিং

দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে!

বিস্তারিত জানতে ফোন দিন :  01309-541565 অথবা 01711-140927।