How to read Penal Code [Part - 2]
‘দণ্ডবিধি কীভাবে পড়তে হবে’ – সে বিষয়ে বর্ণনা করতে গিয়ে দণ্ডবিধির দ্বিতীয় অংশ তথা ১২১-২৯৮ পর্যন্ত একটি সারসংক্ষেপ এই লেখায় রয়েছে। দণ্ডবিধির এই অংশটি পড়ার শুরুতে এবং শেষে আরেকবার পড়ে নিলে এই নিবন্ধটি আপনার বিশেষ কাজে দেবে আশা করি।
সাক্ষ্য আইন [ধারা ৫৬-১০০]
[বিশেষ জ্ঞাতব্য : এই কনটেন্টটি মূলত ‘আইনের ধারাপাত’ নামক বইটির 110-111 পৃষ্ঠা থেকে নেওয়া হয়েছে। আইনের ধারাপাত বইটি কুরিয়ারে সংগ্রহ করতে ফোন দিন : 01712-908561]
[এই অংশের ওপর আগামী 27 নভেম্বর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যারা ফ্রি একাউন্ট খুলেছেন তারা কীভাবে পরীক্ষা দিতে হবে বা একাউন্ট ব্যবহার করতে হবে – তা যদি বুঝতে না পারেন তবে এই ভিডিওটি দেখে রাখতে পারেন : https://youtu.be/NeFQgtxJbZs]
এবারে সাক্ষ্য আইনের দ্বিতীয় খণ্ড। এর বিস্তৃতি ৫৬ থেকে ১০০ ধারা পর্যন্ত। দ্বিতীয় খণ্ডের মূল শিরোনাম ‘প্রমাণ’। এই খণ্ডে অধ্যায় ৩ থেকে অধ্যায় ৬ পর্যন্ত যেসমস্ত শিরোনাম বা উপশিরোনাম আছে সেগুলো হলো : যে সকল ঘটনা প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই, মৌখিক সাক্ষ্য, দলিলী সাক্ষ্য, সরকারি দলিল, দলিল সম্পর্কে অনুমান এবং দলিলী সাক্ষ্য দ্বারা মৌখিক সাক্ষ্য বর্জন । এগুলো এমনভাবে আয়ত্ব করতে হবে যেন এই শিরোনামগুলো দেখেদেখেই এর বিষয়বস্তু, সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যাগুলো মনে রাখতে পারেন। এখানে অনেকগুলো ধারা হলেও এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য বেশ কিছু অংশ বাদ দিয়ে পড়তে পারেন।
এই অংশটি থেকে ৫৬-৬০, ৬১-৬৫, ৭৪-৭৮, ৭৯, ৯০ এই কয়েকটি ধারা ভালোভাবে পড়তে হবে। এখানে ৫৮, ৭৪ ও ৭৫ ধারা সম্পর্কে কিছু কথা বিশেষভাবে বুঝে রাখা দরকার। মূল বই থেকেই সামান্য আলোচনা এখানে আপনাদের জন্য তুলে দিলাম।
“… ৫৮ ধারাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে একটি তথ্য বা বিষয় যা কিনা আরজিতে উল্লেখ করা হয়, তা যদি মামলার প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে স্বীকৃত বিষয় হয়ে থাকে তবে তা নতুন করে প্রমাণ করার প্রয়োজন হয় না। অনেক ক্ষেত্রে আসামি কর্তৃক অনেক বিষয়ের মধ্যে কোনো একটি বিষয়ের স্বীকৃতি দিয়ে থাকলে সেটাও আলাদা করে প্রমাণ করার প্রয়োজন হয় না। তার মানে, একপক্ষের দাবিকৃত কোনো বিষয় যদি মামলায় অন্য পক্ষ কর্তৃক কোনোভাবে স্বীকৃত হয়ে থাকে তবে তার আর কোনো প্রমাণের প্রয়োজন পড়ে না। মোদ্দাকথা, স্বীকৃত কোনো বিষয় নিয়ে আদালতে প্রমাণ করার প্রয়োজন পড়ে না।
আরেকটু সহজ উদাহরণে যাবো নাকি? ধরুন, একজন তার স্বামীর বিরুদ্ধে তার নিজের ও সন্তানের খোরপোষ দাবিতে একটি নালিশী মামলা করলো আদালতে। এই মামলা করার সময় আরজিতে ঘটনার বর্ণনায় যা যা বলবেন উক্ত ফরিয়াদি, তার সবই কিন্তু স্বীকৃতি। আরজির সাথে উক্ত পুরুষ লোকটি, যাকে স্বামী বলে দাবি করা হচ্ছে এবং ফলে যার কাছে খোরপোষ দাবি করা হচ্ছে, তার সাথে যে উক্ত ফরিয়াদির বিয়ে হয়েছিলো এটার প্রমাণস্বরূপ তাকে অবশ্যই তার বিয়ের কাবিননামা ও অন্যান্য ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। এগুলো সবই স্বীকৃতি, যা কিনা ৫৮ ধারার ভাষায় স্বীকৃত বিষয়; এবং এটা আদালতে প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই।
আবার যদি, উক্ত স্বামী আদালতে হাজির হয়ে বলে যে, আমি তার স্বামী নই! তাহলে মামলার বিচার্য বিষয়ে নতুন বিষয় হাজির হবে যে, উক্ত বাদী-বিবাদী পরস্পর বিবাহিত কিনা। যাইহোক, আমরা ধরে নিলাম, সেরকম কিছু ঘটেনি বা উক্ত বিবাদী সেরকম কোনো দাবি করেনি। কিন্তু বিবাদী তার জবাবে ফরিয়াদির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বললো যে, তিনি নিয়মিত খোরপোষ দিয়ে আসছেন এবং তা পর্যাপ্ত আকারেই দিয়ে আসছেন।
তার মানে বিবাদী এখানে প্রচ্ছন্নভাবে নিজেকে উক্ত স্ত্রীলোকের বা ফরিয়াদির স্বামী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন কিন্তু। এই স্বীকৃতির কারণে এটি প্রমাণ করার কোনোই প্রয়োজন নেই যে, তারা স্বামী স্ত্রী। তবে খোরপোষ বিষয়ে বিরোধটি থেকে গেলো যা কিনা এই মামলার বিচার্য বিষয়। খোরপোষ বিষয়ে তার অস্বীকৃতি থেকে উদ্ভূত বিরোধটিই এখন বিচার্য বিষয় এবং একইসাথে প্রমাণেরও বিষয়। ক্লিয়ার?” [পৃষ্ঠা ৪৪০, একটি চিরুনি অভিযান – এমসিকিউ পর্ব]।
এবারে সরকারি দলিল ও বেসরকারি দলিল বিষয়ে সামান্য আলোচনা তুলে দিলাম।
“… ৭৪ ধারাতেই এর পাশাপাশি ২ নং উপধারায় এক লাইনেই বলা আছে যে, সর্বসাধারণের জন্য রক্ষিত কোনো বেসরকারি দলিলও সরকারি দলিল হিসেবে গণ্য হবে। তার মানে বেসরকারি দলিল বা ব্যক্তিগত কোনো দলিল যদি সরকারি কোনো কার্যপ্রক্রিয়ায় সরকারের কাছে সর্বসাধারণ বা পাবলিকের জন্য রক্ষিত থাকে সেটাও সরকারি দলিলের অন্তর্ভুক্ত। ক্লিয়ার হয়েছে আশা করি।
অন্যদিকে ৭৫ ধারামতে যা যা সরকারি দলিল নয়, সেগুলোর সবই বেসরকারি দলিল!
এবার একটু আদালতপাড়ায় ঢুকি এ প্রসঙ্গে। তার মানে বিচারকের রায় একটি সরকারি দলিল। কেননা, তা সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক প্রণীত বা লিখিত। আবার, কোনো মামলা করার যে আরজি লেখা হয়, বা তার জবাব দেয় প্রতিপক্ষ – এগুলো যখনই সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা গৃহীত হয় বা বিচারিক কার্যক্রমের অংশ হয়ে যায়, তখন সাথে সাথেই এগুলো সরকারি দলিল বলে গণ্য হবে। এই সমস্ত সরকারি দলিলের ক্ষেত্রে এর জাবেদা নকল বা নকল, যা কিনা উক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী দ্বারা সঠিক বলে গণ্য বা স্বাক্ষরকৃত বা সিলমোহরকৃত হয় – তবে এইসব জাবেদা নকল দিয়ে আদালতে প্রমাণ করা যাবে বা সাক্ষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এটা ৭৭ ধারায় বলা আছে। তার আগের ৭৬ ধারায় বলা হচ্ছে – উপযুক্ত ফিস প্রদানসাপেক্ষে দলিল দেখতে অধিকারসম্পন্ন লোক যেকোনো সরকারি দলিলের জাবেদা নকল তুলতে পারবে বা সংগ্রহ করতে পারবে। আর ধারা ৭৮ এ সাধারণভাবে এইসব দলিল প্রমাণের বিষয়ে কিভাবে প্রমাণ করতে হবে, কোন শর্তে করতে হবে এসব বলা আছে। ধারা ৩টি দেখে নেন। ৭৬ আর ৭৭ ভালোভাবে পড়ে রাখেন।…” [পৃষ্ঠা ৪৪৯-৪৫০, একটি চিরুনি অভিযান – এমসিকিউ পর্ব]।
দ্বিতীয় খণ্ডের অংশ থেকে আর কোনো আলোচনা নেই আপাতত। আপনারা মূল বই দেখে পড়ে নিন। যারা চিরুনি অভিযানের পাঠক আছেন তারা কোনো বিষয় বাদ না দিয়ে ভালোভাবে যেগুলো গুরুত্ব দিয়ে পড়তে বলা হয়েছে তার কোনো কিছুই বাদ দেবেন না।