অনলাইন জুম ক্লাসে

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

২৪ জুন থেকে শুরু

তথ্য জানতে / ভর্তি হতে : 01309-541565

ডু অর ডাই : বার এমসিকিউ এক্সাম ২০২০

[লেখাটি ২০১৯ সালের আগস্টে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো। তখন ২০১৯ সালেই পরীক্ষাটি হবার কথা ছিলো। ফলে লেখার ইংরেজি হেডে বা শিরোনামে ২০১৯ সালটি লেখা থাকলেও মূলত এই লেখাটি আসন্ন বার কাউন্সিল পরীক্ষা ২০২০ এর পরীক্ষার্থীদের জন্যই। ধন্যবাদ।]

পরীক্ষা চলে এলো অবশেষে। বার কাউন্সিলের সর্বশেষ নোটিশ থেকে জানা যায় যে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে সবাই দিশেহারা বিশেষত যারা কিনা বিশেষ কোনোই প্রস্তুতি নিতে পারেননি।

এই লেখায় আপনাদের জন্য পড়ার রুটিন তৈরি করে দিতে চাই। পড়াশোনার প্রস্তুতি বিষয়ে কিছু নির্দেশনা দিয়ে রাখতে চাই। আশা করি এটি আপনাদের ভালো কাজে দেবে।

বলা বাহুল্য, বার কাউন্সিল প্রস্তুতির জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠান – আইনকানুন একাডেমি’র কার্যক্রম চলছে ফার্মগেট ও যাত্রাবাড়ি শাখায়। সেখানে আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে মডেল টেস্ট ব্যাচে ভর্তি চলছে। মডেল টেস্ট ব্যাচে ভর্তির বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হলে এই লিংকে যেতে পারেন। সেখানে এসে পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন অথবা কোচিং সহায়তা প্রয়োজন হলে সেখানে কোচিংও করতে পারেন। আর যারা কোচিং করবেন না, অথবা নিজেই যথেষ্ট কনফিডেন্টলি পড়াশোনা করতে পারবেন তারা আমাদের অনলাইনের বিভিন্ন নির্দেশনা ও মডেল টেস্ট বইটি সংগ্রহ করে প্রস্তুতি নিলেই যথেষ্ট চলবে বলে বিশ্বাস রাখি।

তো, যারা নিজে পড়ার মতো রুটিন করতে চান তাদের জন্য এবার কথা বলা শুরু করি। প্রথমেই কিছু খেজুরে কথায় বিরক্ত না হয়ে পুরোটা ধৈর্য্য সহকারে পড়লে অনেক উপকৃত হবেন বলে আশা করি।

১. সামান্য পুরনো মদ
বার কাউন্সিলের ৭টি কোর্স লোকে দুইভাবে পড়ে। একটি শর্টকার্ট বা জনপ্রিয় রাস্তা হচ্ছে – ছোট সাবজেক্টগুলো আগে শেষ করা। যেমন-
১. সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন [১০ নম্বর]
২. তামাদি আইন [১০ নম্বর]
৩. সাক্ষ্য আইন [১৫ নম্বর]
৪. বার কাউন্সিল অর্ডার এন্ড রুলস [৫ নম্বর]

এই ৪০ নম্বর শেষ করে অন্যান্য বড় সাবজেক্টগুলো ধরে থাকে। সেক্ষেত্রে দণ্ডবিধিকে শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার দেয়; এবং এটাই সঠিক। এরপরে ফৌজদারি কার্যবিধি ও দেওয়ানি কার্যবিধি থেকে যতোটা পারা যায় ততোটা নম্বর এগিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়; কেননা এই বিষয় দুইটি তুলনামূলক কঠিন লাগে বেশিরভাগের কাছে।

দ্বিতীয় আারেকটি পন্থা অবলম্বন করে থাকে সাধারণত নিয়মিত পড়াশোনার মধ্যে যারা আছেন বা পর্যাপ্ত সময় যাদের আছে, তারা। তারা এপাশ থেকে ওপাশ বুঝে বুঝে গুছিয়ে পড়ে থাকেন সাধারণত। সেক্ষেত্রে আমার বরাবরের মতো পরামর্শ হলো এই ক্রমটি মেনে বিষয়বস্তু ধরে ধরে পড়ে যাওয়া –
১. দণ্ডবিধি
২. ফৌজদারি কার্যবিধি
৩. সাক্ষ্য আইন
৪. সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন
৫. দেওয়ানি কার্যবিধি
৬. তামাদি আইন
৭. বার কাউন্সিল অর্ডার ও রুলস

২. বিগত সালের প্রশ্ন বিষয়ে : অবাক হওয়া নিষেধ!
যাইহোক, যেভাবেই পড়েন না কেন আপনি, আপনার জন্য আরো কিছু তথ্য জানা আবশ্যক। যেমন, বিগত সালের প্রশ্নগুলো থেকে কতোটা কমন প্রশ্ন এসে থাকে এবং সেগুলোকে কীভাবে গুরুত্ব দিয়ে পড়বেন সে বিষয়ে একটি সাধারণ নির্দেশনা আছে আমার।

নির্দেশনাটি হলো – বিগত সালের প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে পড়ে নেবেন শুরুতেই। কেননা, বিগত সালগুলোর প্রশ্ন থেকে গড়ে ৩০-৩৫% শতকরা হারে প্রশ্ন এসে থাকে। কখনো হুবহু একই প্রশ্ন আসে। আবার কখনো ঐ একই প্রশ্ন বা ধারা থেকে সামান্য ঘুরিয়ে ধারাভিত্তিক প্রশ্ন এসে থাকে।

উপরে বললাম যে, ৩০-৩৫ ভাগ প্রশ্ন কমন পাওয়া যেতে পারে; তবে এমনও সম্ভাবনা থাকে যে, ৬০-৭০ ভাগ প্রশ্নও কমন পেতে পারেন। ২০১৭ সালের পরীক্ষার প্রশ্নটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করার সময় এই মুহূর্তে নেই। তবে নিচের দুইটি চার্ট মনোযোগ দিয়ে দেখে নিলেই অবশ্য সমঝদারকে লিয়ে ইশারাই কাফি।

অবাক বিস্ময় এটাই যে, ২০১৭ সালের পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্নের ভেতরে ৬৪টি প্রশ্ন বিগত সমস্ত বার ও জুডিসিয়ারির পরীক্ষার প্রশ্ন থেকেই এসেছিলো, তবে তার বেশিরভাগ ঘুরিয়ে ধারাভিত্তিক প্রশ্ন করেছিলো। সেজন্যই, অসংখ্য শিক্ষার্থী ভালো প্রস্তুতি সত্ত্বেও পেরে ওঠেনি।

তার মানে, অবশ্যই বিগত সালগুলোতে সব প্রশ্ন ধারাবাহিকভাবে পড়ে নিতে হবে। তবে এটিও পড়ার একটা এডভান্স পদ্ধতি আছে। এবার সেটি ব্যাখ্যা করি আপনাদের কাছে।

৩. বিগত সালের প্রশ্নগুলো পড়ার সুপার এডভান্স পদ্ধতি
বিগত সালের প্রশ্নগুলো প্লেইনলি পড়ে গেলে বেশ কিছুটা এগিয়ে যাবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু, আরেকটু এগোতে পারলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, আপনার পাশ করা একেবারেই নিশ্চিত করা সম্ভব।

দণ্ডবিধি কোর্সটি দিয়ে আপনাদেরকে বোঝানো হয়তো সহজ হবে। যেমন, দণ্ডবিধিতে মিথ্যা সাক্ষ্য নিয়ে একটি অধ্যায় আছে। অধ্যায়টির ধারার বিস্তৃতি ১৯১ থেকে ২২৯ পর্যন্ত। এই অধ্যায়ে মিথ্যা সাক্ষ্য সংক্রান্ত সমস্ত কিছুর সংজ্ঞা ও শাস্তির বর্ণনা আছে। এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হওয়া সত্ত্বেও এখান থেকে প্রশ্ন খুব বেশি আসেনি। ১৯৩ ধারা থেকে শাস্তির বিধান থেকে একবার মাত্র এবং ২১১ ধারা দুইবার প্রশ্ন এসেছিলো। কিন্তু, এই অধ্যায়টি থেকে অপরাপর ধারা থেকেও প্রশ্ন আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ ধারা আছে; উপরন্তু উপরে বর্ণিত ১৯৩ ও ২১১ ধারা থেকে যেই দুইভাবে প্রশ্ন এসেছে বিগত সালগুলোতে, সেখান থেকেও ভিন্ন ধরনের আরো কয়েকরকমের প্রশ্ন তৈরি করা সম্ভব। ফলে, সেগুলোও বিবেচনায় নিতে হবে। ১৯১ ধারা ও ১৯২ ধারা উভয়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও এখনো কোনো প্রশ্ন আসেনি বিগত সালগুলোতে। দুটোতেই সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে যথাক্রমে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান এবং মিথ্যা সাক্ষ্য উদ্ভাবন করার। ফলে, বিগত সালগুলোতে আসা শুধু ১৯৩ ধারা পড়ে যাওয়াটা বোকামী হবে। এমনকি ১৯৪ ও ১৯৫ ধারা দুইটিও ভালো করে দেখে যাওয়া উচিত। অন্যদিকে, ২০৫ ধারাটিও দেখে যেতে হবে। একারণে, গুরুত্বের তালিকায় আমরা ১৯১ থেকে ১৯৫ এই সব ধারাই উল্লেখ করেছি আমার প্রণীত সাজেশনে। আবার, জনশৃঙ্খলাবিরোধী অপরাধ শিরোনামে আপনারা জানেন, দণ্ডবিধিতে ১৪১ থেকে ১৬০ পর্যন্ত ধারাগুলো থেকে শুধুই ১৪১ ধারা থেকে প্রশ্ন এসেছিলো বিগত সব সাল মিলে! অথচ এই অধ্যায়ে আরো দুইটি অপরাধের উল্লেখসহ বেশ কিছু ধারণা আলোচনা করা আছে। সেগুলো থেকেও প্রশ্ন আসেনি। কিন্তু, প্রশ্ন আসার সমূহ সম্ভাবনা আছে। ফলে সেগুলোকে যত্ন করে পড়তে হবে।

মিথ্যা সাক্ষ্য সংক্রান্ত অধ্যায় থেকেই সারসংক্ষেপ করে দিই একটা। দেখুন, কী কী পড়বেন।

অর্থাৎ, আরেকটু এডভান্স প্রস্তুতি নিতে চাইলে এইভাবে বিগত পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের সাথে সম্পর্কিত ধারণা বা টপিকটি থেকে সামগ্রিকভাবে ধারণাটি রাখতে হবে। আবারো ভেঙে বলি, মিথ্যা সাক্ষ্য বিষয়ে বিগত আসা প্রশ্ন সম্পর্কিত ধারা ১৯৩ ও ২১১ বিষয়েতো পড়বেনই এবং সাথে সাথে এই টপিকটির আদ্যোপান্ত আয়ত্বে আনতে চাইলে আর কয়েকটি ধারা বাছাই করে পড়ে গেলেই চলে, এবং এর বাইরে প্রশ্ন আসবে না। আমার লেখা মডেল টেস্ট বইটিতে এভাবেই সাজেশন তৈরি করে দেওয়া আছে। পরিশেষে এটাই বলতে চাই যে, আমার বিবেচনায় এভাবে প্রস্তুতি নিতে পারলে নিশ্চিতভাবেই ৮০ ভাগেরও বেশি নাম্বার তোলা কঠিন কোনো বিষয় নয়। সাজেশনগুলো অনলাইনে ইমেজ আকারে খুব শীঘ্রই দিয়ে দেবো আশা করি।

৪. নিজের যুদ্ধ, নিজের রুটিন : ডু অর ডাই
এবারে শেষ কথায় আসি। যাদের কোনো কোচিংয়ে যাবার প্রয়োজন নেই, সেইসব সক্ষম শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো রুটিন বাতলানোর কিছু নেই। তবে, যাদের প্রস্তুতি দুর্বল এবং সময় কম থাকার কারণে এযাবৎ কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেননি, তাদেরকে বলবো যে, আপনারা অবশ্যই এখন প্রতিটি দিন গুণে গুণে হিসেব করে যদি দৈনিক অন্তত ৩ ঘণ্টা সময় দিতে পারেন তাহলেই এগিয়ে যাবেন। রুটিনটি প্রস্তাব করার আগে আরো কিছু বিষয় বলে নিই।

ধরে নিচ্ছি যে, আপনার হাতে সবগুলো মূল বই আছে। মূল বই হাতের কাছে থাকা বাঞ্ছনীয়। যেকোনো কোর্স পড়ার সময় কিছু বেসিক বিষয় বিবেচনায় নেবেন। যেমন, প্রতিটি কোর্সের ধারা বা মূল আইনের সূচিপত্রটি ভালো করে অনুধাবন করা। ২০১৭ সালের পরীক্ষায় অনেকেই ভালো প্রস্তুতি সত্ত্বেও চান্স পাননি তার অন্যতম প্রধান কারণ প্রতিটি আইনের সূচিপত্র সম্পর্কে, তথা কোন ধারাসমূহে কোন কোন বিষয়বস্তু বর্ণিত আছে সে সম্পর্কে বেসিক আইডিয়া ছিলো না। আবার, সূচিপত্র দেখে দেখে আইনটিতে বর্ণিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভালোভাবে আইডিয়াগুলো হজম করতে চাইলে সবার আগেই এটি করা উচিত। ভেতরটা দেখার আগে বা পোশাকটা খোলার আগে পোশাকটির গঠনবৈশিষ্ট্য দেখে নিয়ে খুলতে হবে, দেখতে হবে যে বোতাম বা চেইনটি কোথায়, অহেতুক টানাটানি করলে চলবে না।

ফলে প্রথম কাজই হবে সূচিপত্র থেকে প্রতিটি অধ্যায় শিরোনাম ও ধারার শিরোনাম দেখে মনের কল্পনায় বিষয়টির সামাজিক বাস্তবতা ও তার সাথে উক্ত আইনটির সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, আগের সালের প্রশ্নগুলোর ধারা বইয়ে দাগিয়ে নিতে পারেন একটি নির্দিষ্ট কালির মার্কার কলম দিয়ে। আর যেগুলো, সাজেশন আকারে সম্পর্কিত ধারা সেগুলোও আরেকটি কালি দিয়ে দাগিয়ে নেওয়া।

তৃতীয়ত, আগের সালের প্রশ্নগুলোর খুঁটিনাটি বোঝার চেষ্টা করবেন। উক্ত একই ধারা থেকে আরো কি কি প্রশ্ন ভিন্নতরভাবে তৈরি হতে পারে সেদিকেও মনোযোগ দিতে হবে। আর সম্পর্কিত ধারাগুলো প্রথম দফায় না হোক, অন্তত দ্বিতীয়বার যখন পড়বেন তখন সেগুলোকে গুরুত্ব দেবার চেষ্টা করবেন।

চতুর্থত, কোনো পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট শুরুতেই দেবেন না। যখন যে বিষয় পড়বেন তখন সে বিষয়ে ছোট ছোট মডেল টেস্টে অংশ নেবেন নিজেকে যাচাই করার জন্য। সেক্ষেত্রে যারা আমাদের অনলাইনের ফ্রি অথবা পেইড মেম্বারগণ আছেন তারা সহজেই অনলাইনে ঘরে বসেবসেই একেকটা করে পড়া শেষ করবেন ও ছোট ছোট মডেল টেস্ট দেবেন [অনলাইনে প্রতিটি কোর্সের অধ্যায়ভিত্তিক মডেল টেস্ট ছোট ছোট আকারে দেওয়াই আছে]।

পঞ্চমত, সবগুলো কোর্স পড়া শেষ করে পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট বইয়ে হাত দেবেন। সম্প্রতি দেখলাম, ১০ হাজার এমসিকিউ প্রশ্ন সম্বলিত বইও বাজারে এসেছে! একেবারে ফালতু আইডিয়া। কেননা, বহুদিনের গবেষণা থেকে বলছি যে, একেবারে পূর্ণাঙ্গ সাজেশন আকারে গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্ন তৈরি করলেও মৌলিক প্রশ্নের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩ হাজারের বেশি হওয়া সম্ভব নয়। প্রশ্নগুলোকে আরো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করলেও সর্বোচ্চ ৫ হাজার মৌলিক প্রশ্ন হতে পারে। তাহলে, হাজার হাজার প্রশ্ন ডিল না করে আপনাদের কাছে পরামর্শ হলো বাজারের প্রতিষ্ঠিত ও আস্থাভাজন লেখকদের মডেল টেস্ট বইগুলোর মধ্য থেকে গোটা ৫০টি পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট নিজেকে যাচাই করার জন্য দিতে পারেন। তবে, আবারো বলছি যে, সেটি শেষের দিকে দেবেন। শুরুর দিকে নয়। মডেল টেস্টগুলোতে না পারা প্রশ্ন নিয়ে অন্য একটি লেখায় আরো কিছু কথা ছিলো।

এবার আসি রুটিন প্রসঙ্গে। একটি খসড়া রুটিন করে দিলাম নিচে। বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় কত নম্বরের প্রশ্ন করা হয় এবং কোন কোর্স কতটা গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে সেসব বিবেচনায় নিয়েই টপিকগুলো সাজিয়েছি। আগে ছোট কোর্সগুলো দিয়ে রেখেছি। নিচের রুটিনটিতে দেখুন ছোট কোর্সগুলো শেষ করার জন্য ১৫ দিন সময় লাগছে সাকুল্যে। অন্যদিকে, দণ্ডবিধিতে ১৫ দিন [অতিরিক্ত ৪দিন ধরে], ফৌজদারি কার্যবিধিতে ১৫ দিন [অতিরিক্ত ৪দিন ধরে] এবং দেওয়ানি কার্যবিধিতে ২০ দিন [অতিরিক্ত ৪দিন ধরে]। সবমিলিয়ে সব কোর্সগুলোকে মূল ধারা বুঝে বুঝে একটা বেসিক বোঝাবুঝি দাঁড় করাতে লাগছে ৬৫ দিন। এই লেখাটি যেহেতু আগেকার লেখা, সে কারণে আগামী ৬০ দিনের হিসেব অনুযায়ী এই রুটিনটিকে আরো একটু কাটছাট করে নিয়ে অথবা প্রতিদিনের পড়ার ঘণ্টার হিসেবটাকে বাড়িয়ে নিয়ে রিভিশন দেবার জন্য সময় রাখবেন। নিচে রুটিন এর ছকগুলো পরপর দিয়ে রাখলাম।

প্রথমেই ছোট সাবজেক্ট বা কোর্স গুলোর একসাথে একটি ছক।

এবার দণ্ডবিধি পড়ার রুটিন। যাদের আগের প্রস্তুতি আছে, তাদের এতো সময়ও লাগবে না। দেখুন।

এবারে ফৌজদারি কার্যবিধির পড়ার রুটিন। অতিরিক্ত আরো ৪ দিন সময় ধরে নিয়ে পড়বেন।

এবারে দেওয়ানি কার্যবিধি পড়ার রুটিন। যাদের কাছে কঠিন লাগে তাদের জন্য একটি ছোট্ট একটি পরামর্শ অন্য একটি লেখায় আছে; বলেছিলাম যে কীভাবে দেওয়ানি কার্যবিধি থেকে অন্তত 12 নম্বর তোলা যায়। লেখাটির লিংক : https://juicylaw.com/basic-analysis-of-cpc/ 

মডেল টেস্টগুলো দেবার জন্য আমি সবসময় একটি পরামর্শ দিয়ে এসেছি। অন্য একটি লেখায় বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বলেছিলাম। এখন সেই লেখা পড়ার পরামর্শ দেবো না; বরং এখানেই সেই লেখার একটি সারসংক্ষেপ জানিয়ে রাখি।

আমার লেখা বই হোক আর অন্য কোনো লেখকের বই হোক, মডেল টেস্ট দিতে শুরু করলে যে যে প্রশ্ন আপনি ভুল করবেন, সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো পড়তে থাকবেন। দেখবেন, আপনার কনফিডেন্স বাড়তে থাকবে, এবং প্রথমবার পড়ার সময় এড়িয়ে যাওয়া বা কম গুরুত্ব দিয়ে পড়াগুলোর গুরুত্বও বুঝতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবেন। বাজারের কোনো মডেল টেস্ট বইয়েই সাধারণভাবে মডেল প্রশ্নগুলোর উত্তরের রেফারেন্স থাকে না বা উত্তর সংক্রান্ত ধারাগুলোর উল্লেখ থাকেনা। ফলে, না পারা প্রশ্নগুলোর কোনো হদিস পাওয়া কঠিন হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের জন্য। এজন্য আমাদের প্রকাশিত ‘আইনের ধারাপাত – এমসিকিউ মডেল টেস্ট বুক’ প্রতিটি মডেল টেস্টের প্রতিটি প্রশ্নের রেফারেন্স উত্তরপত্রের সাথে আছে। সেক্ষেত্রে আমাদের বইয়ের পাঠকগণ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন বলে আশা রাখছি। আমাদের প্রকাশিত মডেল টেস্ট বইটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকটি দেখতে পারেন : https://juicylaw.com/introduction-to-model-test-book-ain-er-dharapat/

এই হলো – ডু অর ডাই! এই ডু মানে রিড! মানে পড়া। পড়া পড়া আর পড়া। আর এই ডাই মানে পতন। চলতি বাংলায় পস্তানো। পড়বেন নাকি পস্তাবেন? ডু অর ডাই যুদ্ধে এটুকুই বেসিক পরামর্শ।

সকলের সফলতা কামনা করছি। ধন্যবাদ।

অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ
লেখক : চিরুনি অভিযান ও আইনের ধারাপাত সিরিজ গ্রন্থের লেখক;
প্রতিষ্ঠাতা : আইনকানুন একাডেমি
প্রতিষ্ঠাতা : জ্যুসি ল.কম 
01712-908561